আহমেদাবাদ বিমান দুর্ঘটনায় ফরিদাবাদের মেয়ের মৃত্যু: লন্ডনে স্বামীর কাছে যাওয়ার স্বপ্ন ভেঙে চুরমার
আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া সেই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা অনেক পরিবারের হাসি কেড়ে নিয়েছে। এই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ফরিদাবাদের সেক্টর-২২-এর বিখ্যাত ‘বিকানের সুইটস’-এর মালিক মদন সিং রাজপুরোহিতের মেয়ে খুশবু রাজপুরোহিত। মাত্র পাঁচ মাস আগে খুশবুর বিয়ে হয়েছিল লন্ডনে থাকা এক চিকিৎসকের সঙ্গে। বিয়ের পর কিছুদিন তিনি স্বামীর সঙ্গে লন্ডনে ছিলেন। কিন্তু ভিসার সমস্যার কারণে স্বামী একাই লন্ডনে ফিরে যান। সম্প্রতি ভিসা পাওয়ার পর খুশবু খুব উৎসাহ নিয়ে লন্ডনে স্বামীর কাছে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। দুর্ঘটনার দিন তাঁর বাবা মদন সিং আনন্দের সঙ্গে তাঁকে আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিদায়ের কিছুক্ষণ পরই বিমান দুর্ঘটনার খবরে পরিবারে শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরিবারের শোক
বৃহস্পতিবার সকালে খুশবু এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইট এআই-১৭১-এ করে আহমেদাবাদ থেকে লন্ডনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। কিন্তু কে জানত, এই যাত্রাই তাঁর জীবনের শেষ যাত্রা হবে! বিমানটি উড়ার কিছুক্ষণ পরই ভূপতিত হয়। মদন সিং ফরিদাবাদের সেক্টর-২২-এ থাকেন এবং সেখানে ‘বিকানের সুইটস’ নামে একটি দোকান চালান। শুক্রবার দোকানে গিয়ে কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বললে তারা শোকের মধ্যে থাকায় বেশি কিছু বলতে পারেননি। কর্মচারী ওমপ্রকাশ জানান, তারা এই ঘটনা সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানেন না।
১৮ জানুয়ারি হয়েছিল বিয়ে
চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি খুশবুর বিয়ে হয় রাজস্থানের জোধপুরের লুনি এলাকার খারাবেরা গ্রামের বিপুল সিং রাজপুরোহিতের সঙ্গে। বিপুল লন্ডনে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন। বিয়ের পর বিপুল লন্ডনে ফিরে যান, কিন্তু ভিসার জটিলতার কারণে খুশবু তাঁর সঙ্গে যেতে পারেননি। কিছুদিন শ্বশুরবাড়িতে থাকার পর তিনি বাবার বাড়িতে ফিরে আসেন। সম্প্রতি ভিসা পাওয়ায় তিনি লন্ডনে স্বামীর কাছে যাওয়ার জন্য উদগ্রীব ছিলেন।
বাবা-চাচার সঙ্গে শেষ বিদায়
বুধবার মদন সিং এবং তাঁর চাচাতো ভাই খুশবুকে গ্রাম থেকে নিয়ে আহমেদাবাদের উদ্দেশে রওনা দেন। বৃহস্পতিবার তারা খুশবুকে আহমেদাবাদ বিমানবন্দরে পৌঁছে দেন। বিমানবন্দরে বাবা মেয়ের সঙ্গে ছবিও তুলেছিলেন। কিন্তু কেউ জানত না, এই ছবিই তাঁদের শেষ স্মৃতি হয়ে থাকবে। মেয়েকে বিদায় দেওয়ার কিছুক্ষণ পরই দুর্ঘটনার খবর পেয়ে পরিবারটি ভেঙে পড়ে। খুশবুর মায়ের বাড়িতে এখন শুধু কান্নার আওয়াজ। এই অপূরণীয় ক্ষতি পরিবারের জন্য অত্যন্ত বেদনাদায়ক।